১৫০ থেকে ১৭০০ :: ডেঙ্গুর ডাটাসেট
২০২১ সালের সংখ্যাটা ১৫০
২০২২ সালে সংখ্যাটা ২৮১
২০২৩ সালে সংখ্যাটা ১৭০৫
সংখ্যাগুলো খুব সাধারণ হলেও, বাড়ছে। কিসের সংখ্যা এগুলো ? বলবো।
তার আগে জনস্বাস্থ্যবিশেষজ্ঞ ড. শাবানা রোজ চৌধুরী যিনি কিনা ইন্ডিয়ান পাবলিক হেলথ অ্যাসোসিয়েশনের পশ্চিমবঙ্গ শাখার যুগ্ম মহাসচিব তার সাক্ষাৎকারের কিছু অংশ quote করতে চাই
"সার্ভিল্যান্স, ভেক্টর কন্ট্রোল ও সুপারভিশন—এই হচ্ছে কাজের ধারা। সার্ভিল্যান্স টিমের সদস্যরা নির্দিষ্টসংখ্যক বাড়িতে যান। বাড়ির তথ্য নির্ধারিত ফরমে তোলা হয়। কাউকে বাড়ি পাওয়া না গেলে বাড়ির সামনে নোটিশ সাঁটা হয়, বাড়ির মালিককে ফোন করা হয়। ভেক্টর কন্ট্রোল দলের সদস্যরা সার্ভিল্যান্স টিমের তথ্য কাজে লাগান। এ ছাড়া তাঁরা নির্মাণ এলাকায় কীটনাশক ছিটান। পুকুর, জলাশয় বা কুয়ায় গাপ্পি মাছ ও গাম্বুশিয়া মাছ ছাড়েন। গ্রামাঞ্চলে ধানখেতের নালায় গাপ্পি মাছ ও গাম্বুশিয়া ছাড়া হয়।
প্রতিটি সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতাল ও রোগনির্ণয় কেন্দ্র ডেঙ্গু শনাক্তে কাজ করে। যদি কোনো রোগনির্ণয় কেন্দ্রে কোনো রোগীর ডেঙ্গু শনাক্ত হয়, তাহলে ওই রোগীর ঠিকানা ধরে বাড়িতে লোক চলে যায়। রোগ শনাক্ত করার সময় ঠিকানা দিতে হয়। ওই বাড়িতে ও বাড়ির আশপাশের বাড়িগুলোয় মশার ওষুধ ছিটানো হয়। আর কোনো সম্ভাব্য রোগী আছে কি না, তা খুঁজে বের করার চেষ্টা করা হয়।
হাসপাতালে সব সময় জ্বরের রোগী আসে। গাইনি বিভাগ ছাড়া কোনো হাসপাতালের বহির্বিভাগে জ্বরের রোগী ১০ শতাংশ বেড়ে গেলেই সন্দেহ করা হয়। তখন ওই হাসপাতালে ফিভার ক্লিনিক খোলা হয়। সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে এই ফিভার ক্লিনিক খোলার পরামর্শ দেওয়া হয়। প্রতিটি ওয়ার্ডেই এই ক্লিনিক খোলা হয়, যদি এলাকায় জ্বর বেড়ে যাওয়ার প্রবণতা দেখা যায়।
একটা কথা মনে রাখতে হবে, রোগনির্ণয় কেন্দ্রে বা হাসপাতালে, যেখানেই রোগী শনাক্ত হোক না কেন, তার তথ্য সরকারি পোর্টালে জানাতে হবে। পোর্টালের তথ্য দেখেই বোঝা যাবে, কলকাতা শহরের বা পশ্চিমবঙ্গের কোথায় ডেঙ্গু বাড়ছে। এবং সঙ্গে সঙ্গে অ্যাকশন। বলা হয় ‘ডু ইট নাউ’। যা যা করার, তা তখনই করা হয়, কোনো কাজ করার জন্য ফেলে রাখা হয় না।"
পুরোটা পড়তে পারবেন এখানে : https://www.prothomalo.com/opinion/interview/1nh4d5i59r
ক্যাগলে ডাটাসেট দেখছিলাম। হঠাৎ করেই চোখে পরে গেলো ৭ মাস আগে আপডেট করা একটি ডেঙ্গুর ডাটাসেট। নোটবুক গুলো দেখলাম। ভিজুয়াল এবং এনালাইসিস দেখে মন ভরলো না। মনে হলো কিছু একটা মিসিং। তাই যতুটুকু জানি ততটুকু দিয়ে চেষ্টা করলাম। বাকিটা ছবি কথা বলবে।
এনালাইসিস এর কিছু ইনসাইট শেয়ার করি :
কোন বয়সের লোক সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত ?
১. বয়স গ্রুপ '৪১-৫০' সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত
পজিটিভ ডেঙ্গু ফলাফলের শীর্ষ ৩ বয়স গ্রুপ:
১. বয়স গ্রুপ ৩১-৪৫ এর পজিটিভ কেসের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি, যা মোট পজিটিভ কেসের ২৯.০৮%
২. দ্বিতীয় সর্বাধিক প্রভাবিত বয়স গ্রুপ ৪৬-৬০ (যা #66B2FF দ্বারা প্রদর্শিত), যা পজিটিভ কেসের ২৩.৬৪%
৩. তৃতীয় সর্বাধিক প্রভাবিত বয়স গ্রুপ ০-১৮ (যা #99FF99 দ্বারা প্রদর্শিত), যা পজিটিভ কেসের ২১.০১%
ভৌগোলিক বিশ্লেষণ: ১. ডেঙ্গু কেসের সর্বাধিক হার 'যাত্রাবাড়ী' এলাকায়, যার হার ৮১.৫৮%
২. সর্বনিম্ন হার 'সূত্রাপুর' এলাকায়, যার হার ৩২.২৬%
৩. সর্বাধিক ডেঙ্গু হারের এলাকা প্রকার: 'Underdeveloped Area ' (৫৫.৩১%)
৪. সর্বনিম্ন ডেঙ্গু হারের এলাকা প্রকার: 'Developed Area' (৫১.৩০%)
কাই স্কয়ার টেস্ট এলাকা প্রকার এবং ডেঙ্গু সংক্রমণের মধ্যে উল্লেখযোগ্য সম্পর্ক দেখায় না (p >= 0.05)।
৫. সর্বাধিক ডেঙ্গু হারের বাড়ির প্রকার: 'টিনশেড' (৫৪.৫৭%)
৬. সর্বনিম্ন ডেঙ্গু হারের বাড়ির প্রকার: 'অন্যান্য' (৫১.৩৭%)
কাই স্কয়ার টেস্ট পরিসংখ্যান: ০.৭৬ পি-মান: ০.৬৮৩৫ কাই স্কয়ার টেস্ট বাড়ির প্রকার এবং ডেঙ্গু সংক্রমণের মধ্যে উল্লেখযোগ্য সম্পর্ক দেখায় না (p >= 0.05)।
সোজা কোথায় ডেঙ্গু মশা টিনশেড বাড়ি নাকি বাড়িটি গুলশানে অবস্থিত সেটি দেখে মানুষ কামরায় না, হিহি !
ডেঙ্গুর মার্কার বিশ্লেষণ:
১. পজিটিভ কেসের শতাংশ:
NS1: ৫১.৯০%
IgG: ৫৩.৩০%
IgM: ৪৭.৫০% ২.
রোগের ফলাফলের সাথে সম্পর্ক:
NS1: ০.৯৭২ (শক্তিশালী) IgG: ১.০০০ (শক্তিশালী) IgM: ০.০২৩ (দুর্বল)
ব্যাখ্যা: ১. IgG এর পজিটিভ কেসের শতাংশ সবচেয়ে বেশি (৫৩.৩০%), যেখানে IgM এর সবচেয়ে কম (৪৭.৫০%)।
NS1: অডস রেশিও: অসীম (৯৫% CI: ০.০০ - অসীম) পি-মান: ০.০০০০ (অত্যন্ত উল্লেখযোগ্য) এই সম্পর্ক অত্যন্ত উল্লেখযোগ্য।
IgG: অডস রেশিও: অসীম (৯৫% CI: ০.০০ - অসীম) পি-মান: ০.০০০০ (অত্যন্ত উল্লেখযোগ্য) এই সম্পর্ক অত্যন্ত উল্লেখযোগ্য।
বুঝার সুবিধার জন্য বলছি এই দুটো NS1 + IgG টেস্ট পজিটিভ হলে মোটামুটি শতভাগ নিশ্চিত যে আপনার ডেঙ্গু হয়েছে। chi square এর টেস্ট রেজাল্ট সেটাই বলছে।
প্রেডিক্টিভ ফ্যাক্টরগুলো মধ্যে উল্লেখযোগ্য ফ্যাক্টরগুলো হলো :
১. IgG: ৫৮.২৪%
২. NS1: ৪০.৫৩%
৩. এলাকা: ০.৫২%
৪. বয়স: ০.৪৩%
৫. বাড়ির প্রকার: ০.০৯%
যদি আমার এই লেখা নীতি নির্ধারণী পর্যায়ে কেউ পড়ে থাকেন , অনুরোধ করবো ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে ডাটা ইউজ করে, সবার অংশগ্রহণে (ক্যাটাগরি ১ সরকারি কর্মকর্তা এবং জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ, ক্যাটাগরি ২ চিকিৎসক, নার্স, অন্যান্য স্বাস্থ্যকর্মী ক্যাটাগরি ৩ উচ্চবিত্ত, মধ্যবিত্ত, এবং নিম্নবিত্ত মানুষ ) একটি কার্যকরী ফ্রেমওয়ার্ক তৈরী করে সেটাকে ইমপ্লিমেন্ট করুন।
লেখা শুরু হয়েছিল কিছু সংখ্যা দিয়ে, সংখ্যাগুলো হলো মানুষের প্রাণহানির সংখ্যা।
আমরা কেউ চাই না এই সংখ্যা ২০২৪ সালে এসে আগের সব রেকর্ড ভেঙে ফেলুক।
ডাটা এনালিটিক্স এরবিস্তারিত দেওয়া আছে ক্যাগল এর নোটবুকে
ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে ডাটার কি চমৎকার ব্যাবহার জানতে এই ইন্টার্ভিউটি পড়তে পারেন
Last updated